মিজানুর রহমান: ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে প্রাথমিক ভাবে ওষুধের উপর ভরসা রাখা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসেও বদল আনার কথা বলে থাকেন তাঁরা। কী খেলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে ইউরিক অ্যাসিড, রইল হদিস।
পায়ের গোড়ালিতে ব্যথা কিংবা অস্থিসন্ধি ফুলে গিয়ে তীব্র যন্ত্রণা বা গাঁটে গাঁটে ব্যথা— এই ধরনের শারীরিক অসুস্থতা রোজের জীবনে লেগেই থাকে। কর্মব্যস্ত জীবন এবং পরিবর্তিত খাদ্যাভ্যাস যে সব অসুখকে আরও বড় আকারে ডেকে আনছে, তার মধ্যে অন্যতম রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া।
খাবার থেকে উৎপন্ন ইউরিক অ্যাসিড রক্তে মিশে কিডনিতে গিয়ে পৌঁছায়। কিডনি এই দূষিত পদার্থকে ছেঁকে মূত্রের মাধ্যমে শরীরের বাইরে নির্গত করে দেয়। কিন্তু যকৃত যদি নির্গত ইউরিক অ্যাসিডের চেয়ে বেশি পরিমাণ ইউরিক অ্যাসিড তৈরি করে, তখন কিডনি সেই মাত্রাতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিড দেহের বাইরে পাঠাতে ব্যর্থ হয়। ফলে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যায়। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন এবং অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এর মূল কারণ। ক্রমশ এই ইউরিক অ্যাসিড অস্থিসন্ধিতে জমা হতে থাকে। এর ফলে অস্থিসন্ধি ফুলে গিয়ে ব্যথা হতে থাকে। চিকিৎসকদের মতে, ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে গেলে প্রাথমিক ভাবে ওষুধের উপর ভরসা রাখা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে খাদ্যাভ্যাসেও বদল আনার কথা বলে থাকেন তাঁরা। কী কী ডায়েটে রাখলে নিয়ন্ত্রণে থাকবে রক্তে ইউরিক অ্যাসিড, রইল তার হদিস।
১) লেবু: ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে লেবু অত্যন্ত কার্যকর। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ লেবু ইউরিক অ্যাসিডকে মূত্রের মাধ্যমে শরীরের বাইরে বার করে দেয়। ইউরিক অ্যাসিড থেকে মুক্তি পেতে প্রতি দিন লেবু খাওয়া প্রয়োজন। লেবু ইউরিক অ্যাসিড কমানোর পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমাতেও দারুণ কার্যকর। কমলালেবু, মুসাম্বি, পাতিলেবু— সব ধরনের লেবুজাতীয় ফলই ইউরিক অ্যাসিডের মোক্ষম অস্ত্র হতে পারে।
২) হলুদ: ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভরসা রাখতে পারেন হেঁশেলের এই মশলাও। প্রদাহ কমানোর উপাদান সমৃদ্ধ হলুদ ইউরিক অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। ইউরিক অ্যাসিড যেহেতু হাঁটুতে বেশি প্রভাব ফেলে, হাঁটুর ব্যথা কমাতে লাগাতে পারেন হলুদের মিশ্রণ। ইউরিক অ্যাসিড থাকলে রোজ সকালে খাওয়া যেতে পারে কাঁচা হলুদও।
৩) উদ্ভিজ্জ প্রোটিন: শরীর সুস্থ রাখতে প্রতি দিন খাবারে প্রোটিন রাখতেই হবে। এ দিকে, প্রাণীজ প্রোটিন বেশি খেলে ইউরিক অ্যাসিডের পরিমাণ বেড়ে যাবে। এমন সময়ে উদ্ভিদই ভরসা। শাকসব্জি খাওয়ার পাশাপাশি, নানা রকম দানাশস্য, ডাল, মাশরুম খাবারে যোগ করতে পারেন।
৪) ‘লো ফ্যাট’ দুগ্ধজাত খাবার: খেতে ভাল লাগলেও ‘ফুল ক্রিম’ বা ‘ফুল ফ্যাট’ যুক্ত দুধ এবং সেই দুধ দিয়ে বানানো খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। বদলে প্রতি দিন ‘ডবল টোনড’ বা ‘স্কিমড’ দুধ থেকে বাড়িতে পাতা দই খেতে পারেন। বানাতে পারেন ঘোল, পনিরও।
৫) আপেল: এই ফলে প্রচুর পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার থাকে, যা ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। ফাইবার রক্তের ইউরিক অ্যাসিড শোষণ করে নেয়। এ ছাড়া, আপেল ম্যালিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ যা শরীরে ইউরিক অ্যাসিডের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.